নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকারের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে একাধিক বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে এখনও কাজে যোগদান করতে না পারায় ঋণগ্রহীতা দিনমজুর পরিবারগুলো ঋণ পরিশোধে পড়েছে মহাবিপদে। গৌরনদীর ইউএনও ইসরাত জাহান জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত কেউ কিস্তি তুলতে পারবে না। দোকানদার আইউব আলীর স্ত্রী সাহেদা বেগম বলেন, তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে ব্র্যাক, আশা, কারসা, পদক্ষেপ, ব্যুরো বাংলাদেশ ও জাগরনী চক্র নামের কয়েকটি এনজিওর কাছ থেকে ৯ লক্ষাধিক টাকা লোন নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এদিকে এনজিওর তরফ থেকে কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩১ মে সকালে জাগরনী সংগঠনের এরিয়া ম্যানেজার সোহাগসহ অন্যান্য এনজিওর কর্মীরা আমাদের বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। মাঠকর্মীদের চাপ সইতে না পেরে আমার স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষণিক তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাহেদা বেগম বলেন, সেখানে ৩ দিন চিকিৎসার পরেও আমার স্বামীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে নাম কেটে দেয়া হলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসি। আমার স্বামী অসুস্থ জেনেও এনজিওরকর্মীরা প্রতিদিন বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন। গেরাকুল গ্রামের ঋণ গ্রহীতা রিকশাচালক হেলাল বেপারী ও কালাম শিকদার বলেন, করোনার ঝুঁকির মধ্যেও প্রতিদিন পরিবারের সদস্যদের আহারের জন্য বের হয়ে আগের মতো আয় রোজগার হচ্ছে না। বর্তমানে তেমন কোন লোক রাস্তায় বের হচ্ছে না। আগে রিকশা চালিয়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশ’ টাকা আয় হলেও এখন সারাদিনে একশ’ টাকা আয় হচ্ছে না। এ অবস্থায় এনজিও’র মাঠকর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান বলেন, সরকার আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিওগুলোকে কিস্তির টাকা আদায় না করার জন্য অনুরোধ করেছে। নির্ধারিত তারিখের আগেই মাঠ পর্যায়ে কিস্তি আদায় কিংবা চাপ প্রয়োগের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply